মৃত্যুর পরে কাফন ও দাফন
জীবন মরণের স্বরূপ
![]() |
| মৃত্যুর পরে কাফন ও দাফন |
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন
আল্লাজি খালাকাল মাউতা ওয়াল হায়াতা
মৃত্যুর পরে কাফন ও দাফন
যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন ।
মৃত্যুর পরে কাফন ও দাফন
অর্থাৎ তিনি মানুষের জীবন ও মরণ সৃষ্টি করেছেন মানুষের এ দু'টি
জিনিস সমস্ত ক্রীয়া কর্মে পরিব্যাপ্ত। জীবন একটি অস্তিবাচক বিষয়, বিধায়
এর জন্যে 'সৃষ্টি' শব্দ যোগ করা হয়েছে কিন্তু মৃত্যু নাস্তিবাচক বিষয়
মৃত্যুর পরে কাফন ও দাফন
কাজেই একে সৃষ্টি করার অর্থ কি ? এই প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া
যায় । সর্বাধিক স্পষ্ট বর্ণনা মতে মৃত্যু নাস্তিকে বলা হয় না বরং মৃত্যুর সংগা
হলো আত্মা ও দেহের সম্পর্ক ছিন্ন করে আত্মাকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর
করা হয়। এটা অস্তি বাচক বিষয় জীবন যেমন একটি অবস্থার নাম,
মৃত্যুও তেমনি একটি অবস্থা হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাজিআল্লাহু আনহু) ও
অন্য কয়েকজন তাফসীরবিদ থেকে বর্ণিত আছে, মরণ ও জীবন দু'টি
শরীরী সৃষ্টি। মরণ ভেড়ার আকারে এবং জীবন একটি ঘোটকীর আকারে
বিদ্যমান হাদীসে আছে কিয়ামতের দিন যখন জান্নাতীরা জান্নাতে এবং
জাহান্নামীরা জাহান্নামে দাখিল হয়ে যাবে, তখন মৃত্যুকে একটি ভেড়ার
আকারে উপস্থিত করা হবে এবং পলসিরাতের নিকট জবাই করে ঘোষণা
করা হবে এখন যে যেই অবস্থায় আছে অনন্তকাল সে সেই অবস্থায়
থাকবে। এখন থেকে কারও মৃত্যু হবে না কিন্তু এই হাদীস থেকে দুনিয়ার
মৃত্যুর শরীরী হওয়া জরুরী নয় বরং এর অর্থ এই যে, দুনিয়ার অনেক
অবস্থা ও কর্ম যেমন কিয়ামতের দিন শরীরী ও সাকার হয়ে যাবে যা
অনেক সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত তেমনি মানুষের মৃত্যুরূপী অবস্থাও
কিয়ামতে শরীরী হয়ে ভেড়ার আকার ধারণ করবে এবং তাকে জবাই করা
মরণ ও জীবনের বিভিন্ন স্তর
আল্লাহ পাক স্বীয় অপার শক্তি ও প্রজ্ঞা দ্বারা সৃষ্টিকে বিভিন্ন ভাগে
বিভক্ত করে প্রত্যেককে এক প্রকার জীবন দান করেছেন। সর্বাধিক পরিপূর্ণ
স্বয়ংসম্পর্ণ জীবন মানুষকে দান করা হয়েছে এতে একটি বিশেষ সীমা
পর্যন্ত আল্লাহ পাকের সত্তা ও গুণাবলীর পরিচয় লাভ করার যোগ্যতাও
নিহিত রয়েছে এই পরিচয়ই মানুষকে খোদায়ী আদেশ নিষেধের অধীন
করার ভিত্তি এবং এই পরিচয়ই সেই আমানতের গুরুভার, যা বহন করতে
অবকাশ, পৃথিবী ও পর্বতমালা অক্ষমতা প্রকাশ করে কিন্তু মানুষ আল্লাহ
প্রদত্ত যোগ্যতার বলে তা বহন করতে সক্ষম হয়। এই জীবনের বিপরীতে
আসে মৃত্যু, যার উল্লেখ কোরআনে আছে,
(আওয়ামান কানা মায়তান ফা আহইয়াইনাহু) অর্থাৎ, কাফেরকে মৃত এবং
মু'মিনকে জীবিত আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কারণ, কাফের তার উপরোক্ত
পরিচয় বিনষ্ট করে দিয়েছে সৃষ্টির কোন কোন প্রকারের মধ্যে জীবনের
এই স্তর নেই, কিন্তু চেতনা ও গতিশীলতা বিদ্যমান আছে এই জীবনের
বিপরীতে আসে সেই মৃত্যু, যার উল্লেখ কোরআনে দেওয়া হয়েছে।
ওয়া কুনতুম আমওয়াতান ফাআহইয়া কুম ছুম্মা ইউ মিতুকুম
ছুম্মা ইউহয়ীকুম ।
অর্থ তোমরা মৃত ছিলে অতঃপর জীবিত করা হলো অতপর তোমরা
আবার মৃত বরণ করবে পুনরায় জীবিত করা হবে।
এখানে জীবনের অর্থ অনুভূতি ও গতিশীলতা এবং মৃত্যুর অর্থ তা
নিঃশেষ হয়ে যাওয়া কোন কোন সৃষ্টির মধ্যে এই অনুভূতি ও
গতিশীলতাও নেই, কেবল বৃদ্ধি পাওয়ার যোগ্যতা আছে যেমন সাধারণ
বৃক্ষ ও উদ্ভিদ এ ধরনের জীবনের অধিকারী এই জীবনের বিপরীত আসে
সেই মৃত্যু, যার উল্লেখ কোরআনে আছে :
এই তিন ধরনের জীবন মানব জন্তু জানোয়ার ও উদ্ভিদের
মধ্যে সীমিত। এগুলো ছাড়া অন্য কোন বস্তুর মধ্যে এই ধরনের জীবন
নেই, তাই আল্লাহ পাক পাথর নির্মিত প্রতিমা সম্পর্কে বলেছেন,
কিন্তু এ সত্ত্বেও জড় পদার্থের মধ্যেও অস্তির জন্যে
অপরিহার্য বিশেষ এক ধরনের জীবন বিদ্যমান আছে, এই জীবনের প্রভাবই
কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
এমন কোন বস্তু নেই যা আল্লাহ পাকের প্রশংসা কীর্তন করে না উপরের
আয়াতে বর্ণনা থেকে মৃত্যুকে আগে উল্লেখ করার কারণও ফুটে উঠেছে
মূলতঃ মৃত্যুই আগে অস্তিত্ব লাভ করে। এমন প্রত্যেক বস্তুই পূর্বে মৃত্যু
জগতে থাকে পরে তাকে জীবন দান করা হয় এ কথাও বলা হয় যে,
পরবর্তী আয়াতে মরণ ও জীবন সৃষ্টি
করার কারণ মানুষের পরীক্ষা নির্ণয় করা হয়েছে এই পরীক্ষা জীবনের
তুলনায় মৃত্যুর মধ্যে অধিক কারণ যে ব্যক্তি নিজের মৃত্যুকে উপস্থিত
জ্ঞান করবে সে নিয়মিত সৎকর্ম সম্পাদনে অধিকতর সচেষ্ট হবে। কারণ,
জীবনের প্রতি পদক্ষেপে মানুষ এই অভিজ্ঞতা লাভ করতে থাকে যে, সে
নিজে অক্ষম এবং আল্লাহ পাক সর্বশক্তিমান। এ অভিজ্ঞতা মানুষকে সৎ
কর্মে উদ্বুদ্ধ করে। কিন্তু মৃত্যু চিন্তা, কর্ম, সংশোধন ও সৎকর্ম সম্পাদনের
সর্বাধিক কার্যকর
হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাজিআল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মৃত্যু উপদেশের জন্যে এবং বিশ্বাসই ধনাঢ্যতার
জন্য যথেষ্ট
উদ্দেশ্য হলো এই যে, বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনদের মৃত্যু প্রত্যক্ষকরণ
সবচেয়ে বড় উপদেশ দাতা যারা এই দৃশ্য দেখে প্রভাবিত হয় না, অন্য
কিছু দ্বারা তাদের প্রভাবিত হওয়া সুদুর পরাহত। আল্লাহ পাক যাকে ঈমান
ও বিশ্বাসরূপী ধন দান করেছেন, তার সমতুল্য কোন ধনাঢ্য ও
অমুখাপেক্ষী নেই, রবী ইবনে আস (রাযিআল্লাহু আনহু) বলেন, মৃত্যু মানুষকে সংসারের
সাথে সম্পর্কহীন করা ও পরকালের প্রতি আগ্রহান্বিত করার জন্যে যথেষ্ট।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় যে, মরণ ও জীবনের সাথে
জড়িত মানুষের পরীক্ষা সম্পর্কে আল্লাহ পাক বলেন, আমি দেখতে চাই
তোমাদের মধ্যে কার কর্ম ভাল এ কথা বলেননি যে, কার কর্ম বেশী। এ
থেকে বোঝা যায়, কারও জমির পরিমাণ বেশী হওয়া আল্লাহ পাকের কাছে
আকর্ষণীয় নয় বরং কর্মটি ভাল, নির্ভুল ও মকবুল হওয়াই ধর্তব্য একারণে
কিয়ামতের দিন মানুষের কর্ম গণনা করা হবে না বরং ওজন করা হবে।
এতে কোন একটি কর্মের ওজনই হয়তো হাজার কর্ম অপেক্ষা বেশী হবে
হজরত ইবনে ওমর (রাযিআল্লাহু আনহু) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এই আয়াত তিলাওয়াত করে
| পর্যন্ত পৌঁছেন এবং
.jpeg)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন